বইমেলা ২০২০-এ প্রকাশ পেয়েছে লেখক ও অনুবাদক আফসানা বেগমের দুটি বই―’কোলাহল থামার পরে’ ও ‘সিয়ান অথবা নাবিল’। প্রথমটি উপন্যাস, দ্বিতীয় বইটি তার লেখা প্রথম সায়েন্স ফিকশন।

আফসানা বেগম প্রবাসী লেখক। থাকেন মালয়েশিয়ায়। সাহিত্যের ক্ষেত্রে তিনি ভিন্ন ভিন্ন ধরন নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন। নিয়মিত ছোটগল্প ও উপন্যাস লেখেন তিনি, এ পর্যন্ত বেশ অনেকগুলি বই অনুবাদ করেছেন।

লেখালেখির ক্ষেত্রে তিনি স্বতস্ফূর্ততায় বিশ্বাস করেন। যেভাবে লিখতে তিনি চান, সেভাবেই লেখেন। ‘কোলাহল থামার পরে’ প্রকাশ করেছে ‘প্রথমা’, আর তার সায়েন্স ফিকশন প্রকাশিত হয়েছে ‘অবসর’ থেকে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আয়মান আসিব স্বাধীন।

আফসানা বেগমের জন্ম ঢাকায়, ১৯৭২ সালে। হলিক্রস কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবসায় প্রশাসনে স্নাতক সম্মান ও স্নাতকোত্তর করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন কিছুদিন।

জেমকন তরুণ কথাসহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন ২০১৪ সালে।


১. উপন্যাস ‘কোলাহল থামার পরে’র ফ্ল্যাপ থেকে

“বাবার নিপীড়ন, নির্যাতনে অতিষ্ঠ মা ঘর থেকে পালিয়ে গেছে আরেকজনের হাত ধরে। ঘরে আসে সৎমা। সৎমায়ের ভাইয়ের যৌন নির্যাতন থেকে রেহাই পেতে ভাইসহ আশ্রয় নেয় সৎবাবার কাছে। সৎবাবার হাত থেকেও রেহাই পায়না নিরুপায় এই কিশোরী। একদিন রণচণ্ডীহয়ে ওঠে বালিকা। দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপায় সৎবাবাকে। তারপর রুদ্ধশ্বাস পলায়ন। ছুটছে, ছুটছে। ছুটতে ছুটতে কত দূর যাবে সে, কোথায় নিস্তার তার?”

২. সায়েন্স ফিকশন ‘সিয়ান অথবা নাবিল’ এর ফ্ল্যাপ থেকে

“ঘুম ভেঙে সিয়ান দেখে অচেনা এক সাদা-নীল ঘরে শুয়ে আছে—হাসপাতাল হবে হয়ত। স্প্রিং-এর প্রান্তে চাকা লাগানো পায়ে গড়িয়ে দুজন নার্স আসে, কৃত্রিম মানুষ তারা—নিকি আর জিনিথ। সিয়ান জেগে ওঠে সেই সময়ে যখন মানবিক কাজের জন্য আর মানুষের ওপরে নির্ভর করা যায় না। যখন বিচিত্র ভাষার জায়গা নিয়েছে গ্লোবাল ভাষা আর বন্ধুত্ব-ভালোবাসা হয়ে গেছে এক বিস্মৃত অভ্যাস। অথচ সিয়ানের স্মৃতিতে তখন জ্বলজ্বলে অন্য এক মানুষের অস্তিত্ব, যার নাম নাবিল। তার আছে অন্য এক পৃথিবী, যা শত শত বছর আগের। আজকের গুরুত্বপূর্ণ পরিচয় ভুলে সে তাই বাস করে আবেগী অতীতে। অসম্ভব জেনেও ফিরে যেতে চায় সেখানেই, যেখানে মানুষ ফিরে যেতে পারে না। আপন করে পেতে চায় প্রিয় মানুষদের যারা কে জানে কোন কালে কোথায় মিশে গেছে।

শত বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও সিয়ান দমে না। যন্ত্রের সহায়তায় যন্ত্রকেই ফাঁকি দিতে চায়। নিজের ভিতরে জিইয়ে রাখা নাবিলের স্মৃতিময় রাস্তায় হাঁটে, তার মা আর বন্ধু তৃণাকে খুঁজতে থাকে। কিন্তু তাই বলে কি শত শত বছর পিছনে যাওয়া যায়! অথচ অদম্য সিয়ান ঠিকই পৌঁছে যায় সেখানে। তারপর কোনো এক অচেনা মানুষের চোখের ভিতর দিয়ে বন্ধু তৃণাকে খুঁজতে থাকে—কিন্তু খুঁজে পায় কি?”


লেখক লিংক: ফেসবুকরকমারি