স্পেসএক্স কোম্পানি শুরু করতে অনুপ্রাণিত করেছে যে সায়েন্স ফিকশন বইটি তার নাম জানালেন এলন মাস্ক।
এলন মাস্ককে নিয়ে একটা বই আছে। নাম ‘এলন মাস্ক—টেসলা, স্পেসএক্স, অ্যান্ড দ্য কুয়েস্ট ফর ফ্যান্টাস্টিক ফিউচার’। বইটার লেখক অ্যাশলি ভ্যান্স। এই বই থেকে জানা যায়, টিনেজ বয়সে এলন মাস্ক মানবজাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে এক ধরনের ব্যক্তিগত তাড়না বোধ করতেন। শেষপর্যন্ত মানবজাতির কী হবে, কোথায় যাবে তা নিয়ে চিন্তা করতেন, উত্তর খুঁজতেন।
অ্যাশলি ভ্যান্সের ওই বই থেকে আরো জানা যায়, বইয়ের প্রতি এলন মাস্কের ভালবাসাই তাকে পরবর্তীতে কার্বনবিহীন জ্বালানির প্রযুক্তি বা বিদ্যুৎশক্তি ব্যবহার করে চলা গাড়ির কোম্পানি টেসলা ও মহাকাশে রকেট পাঠানোর কোম্পানি স্পেসএক্স তৈরিতে অনুপ্রাণিত করেছে।
একটা সায়েন্স ফিকশন সিরিজের বইয়ের কথা মাস্ক আজও বলেন, মানুষকে পড়তে পরামর্শ দেন। সেটা হল আইজাক আসিমভের সাত পর্বের সায়েন্স ফিকশন সিরিজ—ফাউন্ডেশন।
ফেব্রুয়ারির ১৯ তারিখে নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টের পোস্টে মাস্ক লেখেন, যে ধারাবাহিকতায় আসিমভের ফাউন্ডেশন লেখা হয়েছিল, সেই ক্রমানুসারে এটা পড়া আসলেই দারুণ। (‘প্রিলিউড টু ফাউন্ডেশন’ বইয়ে অবশ্য আসিমভ ফাউন্ডেশন সিরিজের কোন বইয়ের পরে কোন বইটি পড়লে কাহিনি বুঝতে সুবিধা হবে তার তালিকা দিয়েছিলেন। তার এই তালিকা অনুসারে পড়ার চাইতে প্রকাশনার তারিখ অনুসারে পড়তে পরামর্শ দিচ্ছেন মাস্ক। আরো অনেকেই এমনটি মনে করেন।)
ভবিষ্যতের মহাবিশ্বে কয়েকটা গ্যালাক্সিব্যাপী ছড়িয়ে থাকা বিশাল এক সাম্রাজ্যের ধ্বংস ও পুনরুত্থান নিয়ে আসিমভের ফাউন্ডেশন সিরিজের কাহিনি।
ফাউন্ডেশন সম্পর্কে মাস্ক ২০১৭ সালে রোলিং স্টোন পত্রিকাকে মাস্ক বলেছিলেন, ফাউন্ডেশন থেকে আমি যে শিক্ষাটা নিয়েছি তা হল আপনার এমন কাজগুলি বেছে নেওয়া উচিৎ যেগুলি সভ্যতাকে আরো দীর্ঘ হতে সাহায্য করবে, অন্ধকার যুগের সম্ভাবনাকে একেবারে কমিয়ে আনবে এবং যদি অন্ধকার যুগ শুরু হয় তাহলে তাকে দীর্ঘ হতে দিবে না।
২০১৩ সালে মাস্ক গার্ডিয়ান পত্রিকাকে বলেছিলেন, ফাউন্ডেশন তাকে শিখিয়েছে যে সভ্যতা চক্রাকারে ঘোরে। ফাউন্ডেশনই তাকে মহাকাশে বিচরণ করার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করেছিল, যাতে মানবজাতির চক্রাকার গতিকে উপরের দিকে এগিয়ে নেওয়া যায়।
মাস্ক বলেছিলেন, ৪.৫ বিলিয়ন বছরের ইতিহাসে এই প্রথম জীবনকে পৃথিবীর বাইরে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে।
মাস্ক ২০০২ সালে স্পেসএক্স শুরু করেছিলেন। এটা ছিল তার তৃতীয় উদ্যোগ। স্পেসএক্সের আগেই তিনি এক্স ডটকম নামে একটা প্রতিষ্ঠান চালু করেছিলেন, পরে যেটার নাম হয়ে যায় পেপাল। অনলাইন বা ইন্টারনেট ব্যবহার করে টাকা লেনদেনের একটি নিরাপদ সিস্টেম পেপাল। পরবর্তীতে ইবে কোম্পানির কাছে ১.৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে পেপাল বিক্রি করে দেন মাস্ক।
এর আগে ২০১৮ সালের জুন মাসেও একবার নিজের টুইটারে ফাউন্ডেশন নিয়ে পোস্ট দিয়েছিলেন এলন মাস্ক। তখন লিখেছিলেন, স্পেসএক্স তৈরির পিছনে সবচেয়ে মৌলিক ভূমিকা ফাউন্ডেশন সিরিজ ও জিরোথ ল [আসিমভের লেখা[-এর।
স্পেসএক্সের পরে ২০০৩ সালে মাস্ক গাড়ির কোম্পানি টেসলা শুরু করেন। এরপর ২০১৬ সালে নিউরালিঙ্ক এবং ২০১৭ সালে দ্য বোরিং কোম্পানি। ফোর্বসের প্রতিবেদন অনুসারে, এলন মাস্ক এখন ৪২.৩ বিলিয়ন ডলারের সম্পত্তির মালিক।
অনুবাদে ফাউন্ডেশন
ফাউন্ডেশন সিরিজের ৭টি বইয়ের অনুবাদ কিনতে পাবেন ঢাকার শাহবাগে আজিজ মার্কেটে, সন্দেশ প্রকাশনীতে। বইমেলায় সন্দেশ প্রকাশনীর স্টল নম্বর ১৭৬-৭৯। এছাড়া অনলাইনে কিনতে পাবেন রকমারী থেকে। লিংক: সায়েন্স ফিকশন ফাউণ্ডেশন সমগ্র।
Comments are closed.